এবার সুইজারল্যান্ড আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি মেনে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি নাগরিকদের গচ্ছিত রাখা অবৈধ অর্থ ফেরত দিতে পূর্ণ সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ঢাকায় নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত রেটো সিগফ্রিড রেংগলি এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মধ্যে এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আলোচনাকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সুইস ব্যাংকে নির্দিষ্ট কিছু বাংলাদেশি ব্যক্তির অবৈধ সম্পদ শনাক্ত ও উদ্ধারে সুইস কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন। সাম্প্রতিক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানকে একটি বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে সুইস রাষ্ট্রদূত এই পরিবর্তনকে বাংলাদেশে ব্যাপক সংস্কারের একটি সুযোগ হিসেবে অভিহিত করেন এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় সুইস সরকারের সমর্থনের আশ্বাস দেন।
এদিকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এই উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকটি কমিশন গঠনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন। উভয় পক্ষ জাতিসংঘের গুম বিরোধী সনদে বাংলাদেশের যোগদানে আনন্দ প্রকাশ করে এবং মানবাধিকার কর্মসূচি আরো সমুন্নত রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে একটি অভূতপূর্ব সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে বর্ণনা করেন এবং নতুন সুইস বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বেসরকারি খাতের আরও বেশি সম্পৃক্ততা এবং সমতল ক্ষেত্র তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
বিশেষ করে আইসিটিতে বাংলাদেশি তরুণদের অপার সক্ষমতার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সুইস সহায়তা কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে সুইস পক্ষের আগ্রহের কথা জানান।
উভয় পক্ষ রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন এবং একমত হন যে মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত জনগণকে নিরাপত্তা, নিরাপত্তা ও অধিকারসহ তাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনই সংকটের একমাত্র সমাধান। সুইস রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি আরও মানবিক সহায়তার আশ্বাস দেন। সুইস দূত সুইস ফেডারেল কাউন্সিলরের কাছ থেকে আসা মূল অভিনন্দন বার্তাটি পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেন।